বছর ঘুরে দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। এই দিন আমাদের দেশের মুসল্লিরা গরু বা খাসি কোরবানি দিয়ে থাকেন। তাই ঈদুল আজহার দিন গরুর মাংস পাতে পড়বে না এমন হতেই পারে না। উৎসব উপলক্ষে দুই-একবার গরুর মাংস খেলেই যে অসুস্থ হয়ে পড়বেন- এমনটা নয়। তবে সুস্থ থাকতে চাইলে নিয়ম মেনে রান্না করা এবং পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার বিকল্প নেই। এছাড়া নির্দিষ্ট কোনও রোগ থাকলেও মানতে হবে বাড়তি সচেতনতা। এ সময় বেশ কয়েকদিন টানা গরুর মাংস খাওয়া হয়। উৎসবের সময় মাংস খাওয়া এড়ানোর উপায় নেই, কিন্তু স্বাস্থ্যের কথাও সে সময় মাথায় রাখতে হবে। এবার ঈদের সময়টা আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে বেশ গরম অনুভূর হতে পারে, তাই ঈদের দিন গরুর মাংস খাওয়ার আগে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। গরুর মাংস খাওয়ার আগে কিছু জরুরি তথ্য জেনে নিন।বাংলাদেশ মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল ও ইবনেসিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের ক্লিনিক্যাল ডায়াটিশিয়ান ও নিউট্রিশন কনসালটেন্ট ফাতেমা সিদ্দিকী ছন্দা জানান, নিজ শরীরের প্রতি কেজির জন্য ০.৮ থেকে ১ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন গ্রহণ করতে পারবেন একজন সুস্থ মানুষ। অর্থাৎ কারোর ওজন যদি হয় ৬০ কেজি, তাহলে তিনি খেতে পারবেন ৪৮ থেকে ৬০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন। তবে দিনে ৭০ গ্রাম এবং সপ্তাহে ৫০০ গ্রামের বেশি প্রোটিন খাবেন না।দুইবেলা মাংস না খেয়ে চেষ্টা করুন এক বেলা খেতে।কিডনি রোগী বা যাদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি তারা গরুর মাংস না খেলেই ভালো করবেন। আবার হৃদরোগী, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা কোলেস্টেরলের রোগীদের জন্যও গরুর মাংস এড়িয়ে যাওয়া ভালো। খেতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।গরুর মাংস রান্না করার আগে দৃশ্যমান সব চর্বি অবশ্যই ফেলে দিতে হবে।গরুর মাংস খাওয়ার পরপরই দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খাবেন না। এতে হজমের গণ্ডগোল অথবা গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েসন বলছে, মাংস কাটার সময় ছোট ও পাতলা করে কাটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে যেমন কম পরিমাণে খাওয়া হয়, তেমনি ভেতরে চর্বি রয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না।স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে গরুর মাংস ভালো করে সেদ্ধ করে খেতে হবে। কারণ, লাল মাংসে টিনিয়া সোলিয়াম নামে একধরনের বিশেষ কৃমিজাতীয় পরজীবী থাকে। ভালোভাবে সেদ্ধ না হলে কৃমিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে।গরুর মাংস বেশি খাওয়া হলে অন্যান্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন।অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে ডায়রিয়া কিংবা অ্যালার্জিজনিত জটিলতা দেখা দিতে পারে। আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও দেখা যায় অধিক পরিমাণে লাল মাংস খেলে। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকতে চাইলে প্রচুর পরিমাণে পানি ও পানিজাতীয় খাবার খাবেন। ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খান।মাংস খাওয়ার সময় সঙ্গে সালাদ রাখুন। এছাড়া ক্যাপসিকাম, বাঁধাকপি, মাশরুম বা পছন্দের সবজি দিয়ে মাংস রান্না করতে পারেন। এতে কম পরিমাণ মাংস খাওয়া হবে।গরুর মাংস খাওয়ার পরপরই দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খাওয়া উচিত নয়। এতে হজমের গণ্ডগোল অথবা গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।যাদের থ্যালাসেমিয়া বা হেমাক্রোমাটোসিস নামে রক্তরোগ আছে, তাদের গরুর মাংস খাওয়া উচিত নয় কারণ, গরুর মাংসে যথেষ্ট পরিমাণে আয়রন আছে।অতিরিক্ত রেড মিট খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও দেখা যায় । কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকতে চাইলে প্রচুর পরিমাণে পানি ও পানিজাতীয় খাবার খেতে হবে।যারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, তারা অবশ্যই চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ ব্যতীত না খাওয়াই উত্তম।মাংস খাওয়ার সময় সঙ্গে সালাদ রাখুন। এছাড়া ক্যাপসিকাম, বাঁধাকপি, মাশরুম বা পছন্দের সবজি দিয়ে মাংস রান্না করা যেতে পারে। এতে কম পরিমাণ মাংস খাওয়া হবে। ভোররে আকাশ/এসআই
১ মাস আগে
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন হাঁটার বিকল্প নেই—এ কথা সবাই জানি। কিন্তু বয়সভেদে হাঁটার পরিমাণ কত হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে অনেকেরই পরিষ্কার ধারণা নেই। চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে হাঁটলেই শরীর ও মন ভালো থাকবে। দেখে নিন, কোন বয়সে কতটা হাঁটলেই মিলবে উপকার—শিশু (৫-১৭ বছর)এই বয়সের শিশুদের দিনে অন্তত ৬০ মিনিট হাঁটা বা শারীরিক কার্যকলাপে অংশ নেওয়া উচিত। এতে হাড় ও পেশি মজবুত হয় এবং মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। শুধু হাঁটা নয়, খেলাধুলা এবং নাচ-গানসহ সক্রিয় জীবনধারা জরুরি।তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৬৪ বছর)প্রতিদিন ৩০ থেকে ৬০ মিনিট হাঁটা এই বয়সীদের জন্য আদর্শ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন মাঝারি তীব্রতায় হাঁটলে হৃদ্যন্ত্র সুস্থ থাকে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মানসিক চাপ কমে।বয়স্ক নাগরিক (৬৫ বছর বা তার বেশি)বয়স বাড়লেও হাঁটা বন্ধ করা যাবে না। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি গতিতে হাঁটলেই শরীর সচল থাকে। এটি পেশির শক্তি ধরে রাখে, ভারসাম্য রক্ষা করে এবং হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসকে সচল রাখে। ধীরে হাঁটলেও নিয়মিত হাঁটতে হবে।বাড়তি কিছু বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ:ওজন কমাতে চান? প্রতিদিন ১০,০০০ পা হাঁটার চেষ্টা করুন—যা প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার।স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হাঁটার রুটিন ঠিক করুন।তীব্রতা বাড়াতে চান? ধীরে ধীরে হাঁটার গতি বাড়ান বা হালকা দৌড় (জগিং) শুরু করুন।হাঁটার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস:আরামদায়ক জুতা ব্যবহার করুন।পর্যাপ্ত পানি পান করুন, বিশেষ করে গরমের দিনে।হাঁটার সেরা সময় সকাল বা বিকেল—তাপমাত্রা তখন অনেকটাই সহনীয়।স্বাস্থ্যই সব সুখের মূল। তাই প্রতিদিনের জীবনে হাঁটাকে অভ্যাসে পরিণত করুন। তবে আপনার বয়স, শারীরিক অবস্থা বা কোনো রোগ থাকলে ব্যক্তিগত পরামর্শ নিতে ভুলবেন না—বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন।ভোরের আকাশ//হ.র
১ মাস আগে
টেস্টোস্টেরন হরমোন শুধু পুরুষের যৌনজীবন নয়, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষদের শরীরে এ হরমোনের মাত্রা নারীদের তুলনায় প্রায় ২০ গুণ বেশি থাকে। তবে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ ও বয়স বৃদ্ধির কারণে অনেকের শরীরেই টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যেতে পারে।ঘাটতির লক্ষণ কী?বয়সভেদে টেস্টোস্টেরনের ঘাটতির প্রভাব ভিন্ন হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ঘাটতির লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে—যৌন ইচ্ছা ও ক্ষমতা কমে যাওয়াবীর্য পাতলা হওয়া ও সন্তান জন্মদানে সমস্যাস্তনের আকার বৃদ্ধি (গাইনোকোমেশিয়া)শরীরের পেশিশক্তি হ্রাস, পেটে চর্বি বৃদ্ধিখিটখিটে মেজাজ, মনোযোগে ঘাটতি ও অবসাদচুল পড়ে টাক হয়ে যাওয়াঘুমের সময়েও ইরেকশন না হওয়াটেস্টোস্টেরন বাড়াতে করণীয়বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু অভ্যাস বদলে এই হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিয়মিত ব্যায়াম, বিশেষ করে ওয়েট ট্রেইনিং ও হাই ইনটেন্সিটি ইন্টারভাল ট্রেইনিং (HIIT) টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে কার্যকর। এ ছাড়া ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং অ্যালকোহল ও মাদক থেকে দূরে থাকাও জরুরি।চিকিৎসা কী?ঘাটতির চিকিৎসা নির্ভর করে উপসর্গের ওপর। হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির (HRT) মাধ্যমে অনেক সময় উপসর্গ কমিয়ে আনা যায়, তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়।বিশেষজ্ঞের মতামতএন্ডোক্রাইনোলজিস্ট ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, “টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি প্রতিরোধে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও অতিরিক্ত গরম বা রেডিয়েশন থেকে নিজেকে রক্ষা করা জরুরি। কেউ যদি রেডিয়েশনের পরিবেশে কাজ করেন, তবে সুরক্ষা ব্যবস্থা অবশ্যই মানতে হবে।”শেষ কথাজীবনযাপনে সামান্য পরিবর্তন এনে, সঠিক অভ্যাস গড়ে তুলেই টেস্টোস্টেরনের ঘাটতির অনেকটাই প্রতিরোধ সম্ভব। তবে সমস্যা তীব্র হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণ নেওয়া প্রয়োজন।ভোরের আকাশ//হ.র
১ মাস আগে
ধূমপান করার কারণে আমাদের দেহের সব অঙ্গ নষ্ট করে দেয়। ছেড়ে দেওয়ার পর কয়েক বছরের মধ্যে শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে বলে জানান চিকিৎসকরা।এ ছাড়া সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পর আমাদের শরীরে যেসব পরিবর্তন হয় সেগুলো-* ধূমপান ত্যাগ করা ২০ মিনিটের মধ্যেই আমাদের রক্তচাপ কমে গিয়ে স্বাভাবিক হয়ে যায়। হাত ও পায়ে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।* ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফুসফুসে জমে থাকা নিকোটিন শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। ফলে ঘ্রাণ ও স্বাদ বোধ বাড়বে।* ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার তিনদিনের মধ্যে আপনার ব্রঙ্কিয়াল টিউব প্রসারিত হবে। ফলে অনেক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে পারবেন, এনার্জি ফিরে আসবে, স্ট্রেস কমবে।* দুই সপ্তাহের মধ্যে শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়ে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে হাঁটাচলা করতে আগে যে হাঁফিয়ে উঠতেন, এই সময় থেকে তা কমে গিয়ে এনার্জি ফিরে পাবেন।* ৩-৯ মাসের মধ্যে বুঝতে পারবেন আপনার আর নিশ্বাস নিতে বিশেষ কষ্ট হচ্ছে না। ধূমপানের কারণে যে খুকখুকে কাশি হতো তাও অনেক কমে এসেছে। এই সময় থেকে ব্রঙ্কিয়াল টিউবের ফাইবার আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে থাকে। যা ফুসফুস থেকে ব্যাকটেরিয়ার দূর করে পরিষ্কার রাখে।* ধূমপান ছাড়ার ১ বছর পরও যারা কোনও দিন ধূমপান করেননি তাদের তুলনায় আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে দ্বিগুণ।* সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার ৫ বছরের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। কোনও দিন ধূমপান না করলেও যে ঝুঁকি থাকে, ৫ বছর পর ঝুঁকির পরিমাণ ঠিক ততটাই কমে আসে।* ধূমপানের ফলে ফুসফুসের যে ক্ষতি হয়, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর ১০ বছর সময় লাগে ফুসফুসের আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে।ভোরের আকাশ/আজাসা
১ মাস আগে