ব্লাড ক্যান্সার ও রক্তরোগ বিষয়ক সেবা দিতে ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল চালু করলো হেমাটোলজি ও ব্লাড ক্যান্সার সেন্টার।মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে রাজধানীর মগবাজার সংলগ্ন ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালে চালু হয়েছে 'হেমাটোলজি ও ব্লাড ক্যান্সার' সেন্টার। প্রধান অতিথি হিসেবে এ সেন্টারটির উদ্বোধন করেন ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আফজালুল করিম।মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, ব্লাড ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার লক্ষ্যে ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল সহানুভূতির সাথে রোগীদের পাশে থাকার অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে এ সেন্টারটির যাত্রা শুরু করে। ব্লাড ক্যান্সার ও রক্তরোগ সম্পর্কিত রোগীরা সাশ্রয়ী মূল্যে এখান থেকে প্রায় সব ধরনের সেবা পাবেন। তারা বলেন, আগামীকাল বুধবার বিশ্ব ব্লাড ক্যান্সার দিবসকে সামনে রেখে চিকিৎসক, বিশিষ্টজন ও সাংবাদিকদের নিয়ে একটি মত বিনিময় সভারও আয়োজন করা হয়। ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালের কনসালটেন্ট রক্তরোগ ও ব্লাড ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. জান্নাতুল ফেরদৌসের সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আফজালুল করিম। আরো উপস্থিত জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালের গাইনি ক্যান্সার বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা.বেগম রোকেয়া আনোয়ার, রক্তরোগ ও ব্লাড ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. ফেরদৌসী বেগম, ডা. আরিফ উর রহমান, ডা. রিফাত জিয়া হোসেন, ডা. তাসনিম হোসাইন এবং হাসপাতালের এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আলতাফ হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি স্পান্সার করেছেন হেলথকেয়ার লিমিটেড। প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আফজালুল করিম বলেন, শুরুতে শনাক্ত হলে ব্লাড ক্যান্সার থেকেও আরোগ্য লাভ করা যায়। শিশুদের ব্লাড ক্যান্সার (এএলএল) ৮০ শতাংশ পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করে, প্রয়োজন যথাযথ চিকিৎসা ও সেবা। বাংলাদেশে ক্রমাগতভাবে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, প্রতি লাখে ১১৪ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে এখনকার চেয়ে দ্বিগুণ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে। ক্যান্সারকে থামাতে এখন থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে। রোগ নির্ণয় করতে হবে। শুরুতে ধরা পড়লে ক্যান্সার এর চিকিৎসা সম্ভব।ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালে দেশের বিশিষ্ট রক্তরোগ বিশেষজ্ঞরা (হেমাটোলজিস্ট) চিকিৎসা ও পরামর্শ দেবেন। একই সাথে এই হাসপাতালে রক্ত রোগ সম্পর্কিত নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে। উল্লেখ্য, মুনাফা নয়, সেবাই প্রথম এই শ্লোগানকে প্রাধান্য দিয়ে ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত। এই লক্ষ্যে ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এখানে ২৫ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে।ভোরের আকাশ/জাআ
১ মাস আগে
দীর্ঘ ১৭ বছর পর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল অনুমোদন হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আনন্দ র্যালি করেছে। একে অপরকে মিষ্টি মুখ করিয়ে ভাগাভাগি করেন আনন্দ।বুধবার (২১ মার্চ) বেলা ১২ টার দিকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস থেকে আনন্দ র্যালি শুরু করে মূল ফটক হয়ে ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়।কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটির সংগঠক এবং কলেজটির শিক্ষার্থী আসিফুল হক বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছি হাসপাতালের জন্য। কলেজে হাসপাতাল না থাকায় প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে ব্যবহারিক ক্লাস করতে হতো আমাদের। শিক্ষার্থীদের চেয়ে বাসের সংখ্যাও কম থাকায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হতো। এখন হাসপাতাল হয়ে গেলে আমাদের এসব কষ্ট লাঘব হবে।শিক্ষার্থীরা জানান, কক্সবাজার মেডিকেলে হাসপাতাল বাস্তবায়ন হলে জটিল জটিল রোগের চিকিৎসা হবে এখানে। যেমন কিডনির ডায়ালাইসিস, আইসিইউ, সিসিইউসহ সব ডিপার্টমেন্ট থাকবে। এ কারণে আমাদের কষ্ট লাঘবের পাশাপাশি উপকৃত হবে এখানকার সাধারণ মানুষ। এখন আমাদের জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে ব্যবহারিক ক্লাস করতে হবে না। শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা খুবই খুশি।পরে কলেজটির অধ্যক্ষ সহ শিক্ষকদের সাথেও আনন্দ ভাগাভাগি করেন শিক্ষার্থীরা। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সোহেল বকস্ কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং মিষ্টি মুখ করিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া তিনিও মিষ্টি খাইয়ে দেন শিক্ষার্থীদের।এসময় অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সোহেল বকস্ বলেন, কক্সবাজারবাসীর এবং কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি ছিলো কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল। এটি ক্রয় কমিটির মিটিং এ চূড়ান্ত অনুমোদন হওয়ায় আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আগামী ২ মাসের মধ্যে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হতে পারে। যেটি ২০২৯ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার আশা করা হচ্ছে।এদিকে এই খবরে স্থানীয় বাসিন্দারা আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, ২৬ লাখ জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি আছে ১২ লাখ রোহিঙ্গা। এছাড়াও এখানে সমাগম হয় লাখ লাখ পর্যটকের। সবমিলিয়ে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতাল খুবই অপ্রতুল। যেখানে নির্ধারিত আসনের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাই কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে এটি এই অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ হবে। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হলেই এখানে এমনিতেই থাকবে সিসিইউ, আইসিইউ ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারও।কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদেরও চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। এ ছাড়াও এখানে লাখ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটে। সব মিলিয়ে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল। যেখানে নির্ধারিত আসনের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তাই কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের অনুমোদন এ অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ হয়ে থাকবে।কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নুরুল আলম বলেন, সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের পূর্ত কাজের অনুমোদন দেওয়ার কথা শুনে খুবই ভালো লাগছে। এটি শুধু কলেজের জন্য নয়, পুরো জেলাবাসীর জন্য বর্তমান সরকারের একটি বিশেষ উপহার।ভোরের আকাশ/এসআই
১ মাস আগে
দেশ প্রথম যাত্রা শুরু হলো স্টুডেন্টস হেলথ কার্ড কার্যক্রমের চট্টগ্রামে । প্রাথমিক পর্যায়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পরিচালিত ৫টি বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে চসিকের অন্যান্য স্কুলে এই কার্যক্রম চাল করা হবে।বুধবার (২১ মে) সকালে নগরের কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।উদ্বোধনী বক্তৃতায় মেয়র বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা শুধু অভিভাবকের দায়িত্ব নয়, প্রতিষ্ঠান এবং সিটি করপোরেশনকেও সে দায়িত্ব নিতে হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে শুধু স্বাস্থ্য নয়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি এবং দায়িত্ববোধের মতো মূল্যবোধ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ‘ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি চট্টগ্রাম’ বাস্তবায়নে এ কর্মসূচি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হবে।মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, হেলথ কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকাদান এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে। কার্ডে শিক্ষার্থীর নাম, জন্মতারিখ, বিদ্যালয়ের নাম, শ্রেণি, অভিভাবকের নাম ও যোগাযোগের তথ্য সংরক্ষণের সুযোগ থাকবে। ৫ থেকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত সর্বমোট ১৪ বার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রেকর্ড রাখা যাবে। প্রতি পরীক্ষায় ওজন, উচ্চতা, চোখ-কান, দাঁত, ত্বক-চুলের অবস্থা, রক্তচাপ ও হিমোগ্লোবিনসহ প্রয়োজনীয় তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কার্ডে একটি পৃথক অংশে টিকাদান সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে। এতে বিসিজি, পোলিও, হেপাটাইটিস-বি, এমআর, পেন্টাভ্যালেন্ট, টাইফয়েড, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও র্যাবিসসহ গুরুত্বপূর্ণ টিকার রেকর্ড রাখা যাবে। এর মাধ্যমে একটি সুস্থ ও সচেতন প্রজন্ম গড়ে তোলা সম্ভব হবে। চট্টগ্রামের এই মডেল ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও অনুসরণীয় হবে। এই প্রকল্পের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকেও অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও চিকিৎসকদের মতে, এটি চসিকের এক অনন্য উদ্যোগ।চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী। সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াছ উদ্দিন আহম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা।বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন। আরও উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন (রানা), কাপাসগোলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোমা বড়ুয়া এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুর বানু চৌধুরী।হেলথ কার্ড চালু করা পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো-পাথরঘাটা সিটি কর্পোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, গুল এজার বেগম সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, ইমারাতুন্নেসা কিন্ডারগার্টেন, পাঁচলাইশ কিন্ডারগার্টেন এবং কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের।ভোরের আকাশ/এসআই
১ মাস আগে
সারাদেশে দেখা দিয়েছে টিকা কার্ডের সংকট। বাচ্চার জন্মের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) টিকা দিতে হয়। টিকা প্রদানের পর নতুনদের পরবর্তী টিকাদানের তারিখ উল্লেখ করে টিকাদান কার্ড দেওয়া হয় এবং পুরাতনদের কার্ডে পরবর্তী টিকাদানের তারিখ উল্লেখ করা হয়। দুর্ভোগ ও বিপাকে পড়ছেন বাচ্চাদের অভিভাবকরা। আর টিকা কার্ড না পাওয়ায় সন্তানের জন্মনিবন্ধন সনদ করাতে পারছেন না তারা।শুধু তাই নয়, কার্ড না থাকায় টিকা কর্মসূচির কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। এদিকে শিশুদের টিকা প্রদানের হার বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি অর্জন করলেও উল্লেখযোগ্য ব্যবধান রয়ে গেছে বলে সতর্ক করেছে ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গ্যাভি।ইপিআই কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন সময় (প্রাপ্যতা অনুযায়ী) যক্ষ্মা, ডিফথেরিয়া, ধনুষ্টংকার, হুপিংকাশি, পোলিও, হেপাটাইটিস বি, হিমো-ইনফ্লুয়েঞ্জা বি, হাম ও রুবেলা এই ৯টি রোগের প্রতিষেধক টিকা প্রয়োগ করা হয়। পাশাপাশি ১৫ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের পাঁচ ডোজ টিটি টিকা দেওয়া হয়।সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘এই সংকট হুট করে হয়নি। গত বছর আমাদের টেন্ডার হয়নি। সাপ্লাই দেয়নি। আমরা বিলও দেইনি। বছর শেষ হয়ে গেছে, আমরা কী করবো? এবার প্রিন্টিংয়ে যাচ্ছে। দু-এক মাস লাগবে হয়তো। এরপর সব জায়গায় পৌঁছে দেবো।’দুর্ভোগ ও বিপাকে অভিভাবকরাময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার জয়রামকুড়া গ্রামের দম্পতি মো. কামাল ও জুলেখা। তারা ভোরের আকাশকে জানান, আমাদের নবজাতক শিশুকে টিকা দেওয়ানোর জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছিলাম। টিকা কার্ড না থাকার কথা জানালেন স্বাস্থ্য সহকারী মো. গিয়াসউদ্দিন আহমেদ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কার্ড পৌঁছলে জানানো হবে। কতদিন অপেক্ষা করতে হবে তা জানানো হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কামাল ও জুলেখা দম্পতি। একই অবস্থা পার্শ্ববর্তী ধোবাউড়া উপজেলাতেও।সদর ইউনিয়নের স্বপন সরকার বলেন, ‘ কয়েক সপ্তাহ ধরে টিকা কার্ডের জন্য যোগাযোগ করছি। একজন স্বাস্থ্য সহকারীকে বলে রেখেছি। কার্ড আসা মাত্রই খবর পাবো বলে জানান স্বপন সরকার।নাম প্রকাশ না করার শর্তে নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েক স্বাস্থ্য সহকারী ভোরের আকাশকে জানান, গত কয়েক মাস ধরে পর্যাপ্ত টিকা কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে আমাদের কোনো অবহেলা নেই। কেন্দ্রীয় অফিস থেকে জেলায় এবং সেখান থেকে উপজেলায় এসে পৌঁছায়। সংকটের কারণ জানি না।দুর্গাপুরের মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা সুজন মারাক। তিনি উপজেলা সদরে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করেন। তিনি জানান, বেশিরভাগ এলাকায় সাদা কাগজে হাতে লিখে টিকা দেওয়ার তথ্য সংরক্ষণ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কোথাও অনলাইন থেকে প্রিন্ট করে কাগজ দেওয়া হচ্ছে। যদিও এগুলো অফিসিয়াল কাজে গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানান সুজন মারাক।টিকা কার্ড পাননি এমন ভুক্তভোগীদের একজন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘গত জানুয়ারি মাসে আমার একটি ছেলে সন্তান জন্ম লাভ করে। জন্মের ৪৫ দিনের মাথায় স্থানীয় মা ও শিশু কেন্দ্রে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে কোনো টিকা কার্ড দেয়নি। তাদের জিজ্ঞেস করা হলে জানায়, কার্ড শেষ হয়ে গেছে অনেক দিন আগে। কিন্তু সরকার থেকে এখনো তাদের কাছে কার্ড সরবরাহ করা হয়নি। তৃতীয় দফায় টিকা দেওয়া হলেও কার্ড এখনো দেয়নি। টিকা কার্ড না দেওয়ার কারণে জন্ম নিবন্ধন সনদ করতে পারছি না।’একই এলাকার আবু সাঈদও এ ঘটনার ভুক্তভোগী। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা অনলাইন পেপার দিয়েছে। সেটা দিয়ে আপাতত টিকা দিচ্ছি। কিন্তু কার্ড দেয়নি। এ কারণে ভবিষ্যতে তো আমরা বিপাকে পড়বো। জন্ম নিবন্ধন সনদ করা যাবে না। এ সংক্রান্ত অন্যান্য সেবা থেকেও বঞ্চিত হবো।’ একই চিত্র বরগুনা জেলায়। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে কয়েক সপ্তাহে ঘুরে শিশু আসফিয়া তাইয়েবার টিকা দেওয়া গেলেও কার্ড পাননি তার মা শাহিমা আকতার।শাহিমা আকতার বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে গিয়ে যথাসময়ে টিকা দিতে পারছি না। এক সপ্তাহেরটা আরেক সপ্তাহে দিতে হচ্ছে। আর টিকা কার্ড তো নাই। দিবে কোত্থেকে? চার মাস হয়ে গেলেও টিকা কার্ড পাইনি। যার কারণে জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদনও করতে পারছি না।’টিকা কার্ডের সংকট রয়েছে মৌলভীবাজার জেলায়ও। জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী নীহার রঞ্জন আচার্য্য বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই টিকা কার্ডের সংকট। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ নেই।’চার লাখ শিশু সব টিকা পায়নি, আওতায় আসেনি ৭০ হাজারশিশুদের টিকা প্রদানের হার বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি অর্জন করলেও উল্লেখযোগ্য ব্যবধানু রয়ে গেছে বলে সতর্ক করেছে ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গ্যাভি। প্রায় চার লাখের মতো শিশু ঠিকমতো সব টিকা পায়নি বলে জানিয়েছে সংস্থাগুলো।এছাড়া তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৭০ হাজার শিশু একেবারেই টিকার আওতায় আসেনি। এতে এসব শিশুর অবস্থা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল এক যৌথ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলগুলোতে টিকা না পাওয়ার হার বেশি। এখানে মাত্র ৭৯ শতাংশ পুরোপুরি টিকা পেয়েছে। কিন্তু ২ দশমিক ৪ শতাংশ এক ডোজ টিকাও পায়নি এবং নয় দশমিক আট শতাংশ টিকার সব ডোজ ঠিকমতো পায়নি। সেই তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ৮৫ শতাংশ শিশু টিকার সব ডোজ পেয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১ মাস আগে