কক্সবাজারবাসীর স্বপ্ন পূরণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫ ০৭:১৯ পিএম
৫০০ শয্যার হাসপাতাল অনুমোদন শিক্ষার্থীদের আনন্দ র্যালি
দীর্ঘ ১৭ বছর পর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল অনুমোদন হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আনন্দ র্যালি করেছে। একে অপরকে মিষ্টি মুখ করিয়ে ভাগাভাগি করেন আনন্দ।
বুধবার (২১ মার্চ) বেলা ১২ টার দিকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস থেকে আনন্দ র্যালি শুরু করে মূল ফটক হয়ে ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটির সংগঠক এবং কলেজটির শিক্ষার্থী আসিফুল হক বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছি হাসপাতালের জন্য। কলেজে হাসপাতাল না থাকায় প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে ব্যবহারিক ক্লাস করতে হতো আমাদের। শিক্ষার্থীদের চেয়ে বাসের সংখ্যাও কম থাকায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হতো। এখন হাসপাতাল হয়ে গেলে আমাদের এসব কষ্ট লাঘব হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, কক্সবাজার মেডিকেলে হাসপাতাল বাস্তবায়ন হলে জটিল জটিল রোগের চিকিৎসা হবে এখানে। যেমন কিডনির ডায়ালাইসিস, আইসিইউ, সিসিইউসহ সব ডিপার্টমেন্ট থাকবে। এ কারণে আমাদের কষ্ট লাঘবের পাশাপাশি উপকৃত হবে এখানকার সাধারণ মানুষ। এখন আমাদের জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে ব্যবহারিক ক্লাস করতে হবে না। শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা খুবই খুশি।
পরে কলেজটির অধ্যক্ষ সহ শিক্ষকদের সাথেও আনন্দ ভাগাভাগি করেন শিক্ষার্থীরা। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সোহেল বকস্ কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং মিষ্টি মুখ করিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া তিনিও মিষ্টি খাইয়ে দেন শিক্ষার্থীদের।
এসময় অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সোহেল বকস্ বলেন, কক্সবাজারবাসীর এবং কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি ছিলো কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল। এটি ক্রয় কমিটির মিটিং এ চূড়ান্ত অনুমোদন হওয়ায় আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আগামী ২ মাসের মধ্যে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হতে পারে। যেটি ২০২৯ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
এদিকে এই খবরে স্থানীয় বাসিন্দারা আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, ২৬ লাখ জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি আছে ১২ লাখ রোহিঙ্গা। এছাড়াও এখানে সমাগম হয় লাখ লাখ পর্যটকের। সবমিলিয়ে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতাল খুবই অপ্রতুল। যেখানে নির্ধারিত আসনের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাই কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে এটি এই অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ হবে। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হলেই এখানে এমনিতেই থাকবে সিসিইউ, আইসিইউ ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারও।
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদেরও চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। এ ছাড়াও এখানে লাখ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটে। সব মিলিয়ে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল। যেখানে নির্ধারিত আসনের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তাই কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের অনুমোদন এ অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ হয়ে থাকবে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নুরুল আলম বলেন, সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের পূর্ত কাজের অনুমোদন দেওয়ার কথা শুনে খুবই ভালো লাগছে। এটি শুধু কলেজের জন্য নয়, পুরো জেলাবাসীর জন্য বর্তমান সরকারের একটি বিশেষ উপহার।
ভোরের আকাশ/এসআই