ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৫১ এএম
বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নের বৈঠক আজ
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক জোড়া লাগানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে দুদেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের মধ্যে বৈঠক হবে আজ বৃহস্পতিবার। সবকিছু ঠিক থাকলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সকালে দুই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকের কথা রয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। অপরদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমেনা বালুচ বৈঠকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন।
গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুদেশের মধ্যে শীতল সম্পর্ক বিরাজ করছিল। ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর রাজনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করার জন্য পাকিস্তানের আগ্রহে সাড়া দেয় বাংলাদেশ। গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে এবং ডিসেম্বরে মিসরে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের। এর ধারাবাহিকতায় দুদেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, বৈঠক ভালো হলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকা আসবেন। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, দুদেশের শীর্ষ নেতৃত্ব ইতোমধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এ থেকেই বার্তা পাওয়া যায় এই বৈঠক থেকে আমরা কী চাই।
বৈঠকের এজেন্ডার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক পরিবেশ ও সংস্থা, কানেক্টিভিটি, প্রতিরক্ষা, কৃষিসহ অন্যান্য সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।’ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজনৈতিক সম্পর্কে শীতলতা থাকলেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক চলমান ছিল। দুদেশের জনগণের মাঝে যোগাযোগ, সহজে ভিসা প্রদান, বাণিজ্য সহযোগিতা আগের মতো বলবৎ ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হলে সম্পর্ক আরও বেশি শীতল হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া কঠিন করা হলে পাকিস্তানও একই পথে হাটে। এরপর থেকে দুদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক আর কখনও স্বাভাবিক হয়নি।
সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক শুধু দ্বিপক্ষীয় উপাদানের ওপর নির্ভর করে না। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের উপাদানও এখানে প্রভাব রাখতে পারে। বৈঠকের পরে কী হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলের মতো দুদেশের মধ্যে শীতল সম্পর্ক কাম্য নয়।
একইসঙ্গে পাকিস্তানের প্রভাবে বাংলাদেশ তৃতীয় কোনো দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে, সেটিও কাম্য নয়। একটি টেকসই সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য পারস্পরিক সম্মান ও বিশ্বাস জরুরি। গত ১৫ বছর সেটির অভাব ছিল। ভবিষ্যতে সম্পর্কের যদি উন্নতি ঘটে, তবে এ অঞ্চলের জন্য ভালো হবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ