আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৫ ০৬:৪২ এএম
গাজার ৭৭% এলাকা এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ৭৭ শতাংশ অঞ্চল বর্তমানে দখল করে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। রোববার (২৫ মে) গাজার মিডিয়া অফিসের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
এক বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েল সরাসরি স্থল হামলা, আবাসিক ও বেসামরিক এলাকায় সেনা মোতায়েন এবং ভারী অস্ত্রের মাধ্যমে আক্রমণ চালিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের বসতবাড়ি, এলাকা, জমি এবং সম্পত্তি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করছে। এর মাধ্যমে গাজার মোট ভূখণ্ডের প্রায় ৭৭ শতাংশ বর্তমানে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “গাজায় চলমান গণহত্যা, জাতিগত নিধন, উপনিবেশবাদী আগ্রাসন এবং দখলদারিত্ব আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়মের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইসরায়েল গাজায় রাজনৈতিক স্বার্থ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শক্তি প্রয়োগ করে দখলদারিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে।”
গাজা পুরোপুরি দখল না করা পর্যন্ত সামরিক অভিযান বন্ধ হবে না বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গত ২১ মে জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা জানি গাজায় এখনও অন্তত ২০ জন ইসরায়েলি বন্দি জীবিত এবং আরও প্রায় ৩৮ জন নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বন্দি উদ্ধারে অল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি বিবেচনা করা হতে পারে, তবে কোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নয়।”
অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত, তবে এর শর্ত হিসেবে তারা যুদ্ধ থামানো, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দাবি করেছে। তবে নেতানিয়াহু এই সব শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি গাজা থেকে হামাসকে উৎখাত, সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা পুনর্দখলের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ইসরায়েলের বিরোধী নেতারা এবং বন্দিদের পরিবার অভিযোগ তুলেছেন, নেতানিয়াহু তার চরম ডানপন্থি রাজনৈতিক জোটসঙ্গীদের খুশি রাখতে এবং নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন।
বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ বলেন, “নেতানিয়াহুর বক্তব্য স্পষ্ট করে দেয়, তিনি গাজাকে বহু বছর দখল করে রাখতে চান।” তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা বলে তিনি মিথ্যা বলছেন।”
গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে, তবে এখন পর্যন্ত যুদ্ধ থামানোর মতো কোনো কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি।
ভোরের আকাশ//হ.র