মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫ ০২:১৮ পিএম
মানিকগঞ্জে বিলুপ্তির পথে বাঁশ ও বেত শিল্প
মানিকগঞ্জের আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রায় বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প। বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্যের কদর এখন আর নেই বললেই চলে। অথচ এই ঐতিহ্যবাহী জিনিসগুলি বছরের পর বছর ধরে বাংলার সংস্কৃতির এক একটি উপাদান। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। যেগুলি গ্রাম বাংলার গৃহস্থের সচ্ছলতা ও সুখসমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে প্রচলিত ছিল। দিন দিন বিলীন হয়ে যাচ্ছে এইসব হস্তশিল্প। আগের মতো তেমন একটা চোখে পড়ে না এসব পন্য।
এক সময় মানিকগঞ্জ জেলায় বাঁশের তৈরি এই জিনিসের অনেক প্রচলন ছিল। তখন প্রতি বাড়িতেই গেলে কিছু না কিছু হস্তশিল্প নজরে আসতো। কিন্তু বর্তমানে তা নেই বললেই চলে। বর্তমানে কিছু পরিবার এসব হস্তশিল্পের কাজ ধরে রেখেছে। আমরা চাইলেই পারি এই হস্তশিল্প ধরে রাখতে তাদের পন্য ব্যবহার করে। সাধারণত গ্রামের লোকেরা এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত এবং বেশির ভাগ তারাই এসব ব্যবহার করে। কুলা,মাথাইল, ঝুড়ি, মাচা, মই, ফাঁদ, হস্তশিল্প ইত্যাদি ছাড়াও মৃতদেহ সৎকার ও দাফনের কাজেও বাঁশ ব্যবহূত হয়। নিত্য ব্যবহার্য এই বাঁশ কালক্রমে লোকসংস্কৃতি ও কারুশিল্পের প্রধান উপকরণ হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশে প্রায় ২৫ প্রজাতির বাঁশ পাওয়া যায়। তার মধ্যে নলিবাঁশ, বইরা বাঁশ দিয়ে শিল্পকর্ম করা সহজ। বাঁশের তৈরি এই শিল্প দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ছাড়াও আদিবাসীদের জীবনাচরণ প্রতীক। আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে বাঁশের তৈরি শিল্পকর্ম দীর্ঘস্থায়ী না হলেও লোকজীবনে ব্যবহারের বহুমাত্রিকতা ও প্রয়োজনের কারণে এই শিল্পকর্ম বংশপরম্পরায় চলে আসছে দীর্ঘ সময় ধরে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে যানা যায়, তাদের পূর্ব পুরুষরাও নাকি এ কাজের সাথে জড়িত ছিল। তাদের কাছ থেকেই তারা কাজ শিখেছে। তারা জানান, মানিকগঞ্জে বর্তমানে প্লাষ্টিক পন্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। কারণ তা তুলনামূলক দাম কম ও আকর্ষণীয়। যে কারনে তাদের তৈরি পন্য বাজারজাত হয় কম। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। বর্তমানে এ পেশায় কাজ করা তাদের জন্য দায় হয়ে দাড়িয়েছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ