ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড়
ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:১৭ পিএম
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যাত্রীদের ফেরত দিল বিআরটিএ
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে যৌথ অভিযান পরিচালনাকালে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সত্যতা পাওয়ায় তিনটি টিকিট কাউন্টারকে জরিমানা করে বরিশাল বিআরটিএ ও জেলা প্রশাসন। এছাড়া মাদারীপুরের শিবচরে পাঁচ্চরের গোল চত্বর এক্সপ্রেসওয়ের বাসস্ট্যান্ডে, ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে ও মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ঢাকামুখি যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল এবং এর সাথে বাড়তি ভাড়ার অভিযোগও উঠছে। এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া ঘাটে এবারের ঈদে ঘরমুখো যাত্রা যেমন ছিল নির্বিঘ্ন, তেমনি ঈদ শেষে কর্মস্থলমুখী যাত্রাও হচ্ছে স্বস্তিদায়ক ও ঝামেলাহীন।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বরিশাল: ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের বাস কাউন্টারগুলোতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে বরিশাল বিআরটিএ ও জেলা প্রশাসন। ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রীদের কাছ থেকে পরিবহনগুলো যেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে সে লক্ষ্যে এই যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এসময় সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৮০ ধারা লঙ্গন করার অপরাধে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সত্যতা পাওয়ায় করিম গ্রুপের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে ৫ হাজার টাকা এবং একই অপরাধে লাবিবা ক্লাসিক পরিবহনের কাউন্টারে ৫ হাজার টাকা, হানিফ পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে ৩ হাজার টাকা। মোট তিনটি টিকিট কাউন্টারকে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সমাপ্তি রায়। এসময় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি, বরিশাল বিআরটিএ মোটরযান পরিদর্শক সৌরভ কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন।
ম্যাজিস্ট্রেট জানান, ঈদ উপলক্ষে বা কোনো অজুহাতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে কিনা, তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আমাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আজ বরিশালের বাস কাউন্টারগুলোতে বিআরটিএ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের যৌথ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত দেওয়া হয়। অন্যদিকে জেলার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গৌরনদীতেও ফিটনেস বিহীন বাস ও টিকিট কাউন্টারগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
শিবচর (মাদারীপুর): মাদারীপুরের শিবচরে ঈদের ছুটি শেষে ঢাকামুখি যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় বাড়ছে এবং এর সাথে বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ উঠছে। রোববার সকালে সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার পাঁচ্চরের গোল চত্বর এক্সপ্রেসওয়ের বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ঢাকামুখি যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। যাত্রীদের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম থাকায় ভোগান্তিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাধারণ যাত্রীরা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দূরপাল্লার যানবাহনগুলোতে কোনো সিট খালি নেই, ফলে দাঁড়িয়ে যেতেও দেখা যায় অনেক যাত্রীদের। বাড়তি ভাড়া দিতেও থেমে নেই যাত্রীরা।
এ বিষয়ে একাধিক যাত্রীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, শিবচর থেকে ঢাকা যেতে দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে পরিবহনগুলো। যেখানে পাঁচ্চর থেকে ভাড়া ছিলো ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, এখন তা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা হয়ে গেছে। কিন্তু ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে পদ্মাসেতু দিয়ে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন বাস কাউন্টারে লোকাল গাড়ির মত যাত্রীদের উঠানামা করাচ্ছে, যার ফলে সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
শিবচর হাইওয়ে থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এক্সপ্রেসওয়েতে সড়কে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য শিবচর থানার হাইওয়ে পুলিশের একটি টহল পুলিশ টিম তৎপর রয়েছে। সড়কে যে কোনো দুর্ঘটনা এড়াতে টহল পুলিশ কাজ করছে।
রাজবাড়ী: এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে ঢাকামুখী যাত্রীদের চোখে-মুখে ছিল স্বস্তির ছাপ।
শনিবার সকাল থেকে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাটে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রিয়জনকে পেছনে ফেলে কর্মস্থলের পথে ছুটছেন অসংখ্য মানুষ। যানজটহীন পরিবেশে ঘাট এলাকায় ছিল স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রিত যানবাহন চলাচল।
ঘাট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া প্রান্ত দিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার যানবাহন পদ্মা নদী পার হয়েছে। যাত্রীবাহী বাসের তুলনায় ছোট গাড়ি ও মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল বেশি।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, সকাল থেকেই যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় কোথাও কোনো ভোগান্তি বা যানজট নেই। বর্তমানে ১৭টি ফেরি চলাচল করছে।
আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম মিলন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া প্রান্তে ২০টি লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রীদের নির্বিঘ্নে পারাপার নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
ভোরের আকাশ/এসএইচ